Kirjailijakuva

Shariful Hasan

Teoksen ঋভু tekijä

6 teosta 9 jäsentä 1 Review

Tekijän teokset

Merkitty avainsanalla

Yleistieto

There is no Common Knowledge data for this author yet. You can help.

Jäseniä

Kirja-arvosteluja

পৃথিবীর কোনায় কোনায় ছড়িয়ে থাকা বিস্তৃত গুপ্ত সঙ্ঘ, হুমকির সম্মুখে থাকা মানব সভ্যতার গতিপথ, কুংফু-কারাতে থেকে জিন প্রকৌশল-মা সরস্বতী’র বিদ্যার হাঁড়ি গলায় সবটুকু উপুড় করে ঢেলে নেয়া নায়ক, নায়কের অব্যর্থ নিশানা, সুবিধেমতো জায়গায় ভিলেনের বোকামী, নায়কের উদ্দেশ্যে ভিলেনের বারবার ফসকে যাওয়া গুলি, অসংখ্য কাকতাল… আধুনিক থ্রিলার গল্পের এই তো রেসিপি। ১৯৮০ সালে উমবার্তো একো’র হাত দিয়ে এলো ‘দি নেইম অফ দি রোজ’; ধর্ম, ইতিহাস, শব্দতত্ত্ব আর রহস্যের এক দারুণ মিশেল এই উপন্যাস দিয়েই বিশ্বসাহিত্যের আঙিনায় পা রাখেন একো। বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দুই বিশ্ববিদ্যালয় কলাম্বিয়া ও হার্ভার্ডে অধ্যাপনা করা একো ছিলেন বিদগ্ধ পণ্ডিত। তাঁর বই পড়া, সে এক কঠিন বৈতরণী পার হবার সামিলই বটে। প্রথম উপন্যাস দিয়েই দুনিয়া মাত করে দেয়া একো রাতারাতি থ্রিলার গল্পের ঢংই পাল্টে দেন। প্রায় দু’দশক পর ২০০০ সালে এসে ধর্ম, ইতিহাস আর রহস্যের মিশ্রণে ড্যান ব্রাউন লিখলেন তাঁর রবার্ট ল্যাংডন সিরিজ, সাহিত্যরসিকদের মতে যা একো’র সস্তা সংস্করণ। কঠিনপাচ্য একো সবার জন্য নয়, বাঙ্গালীর (বৃত্ত ছোট করে বরং বাংলাদেশীই বলা যাক) জন্য তো আরো নয়। মাসুদ রানার পেপারব্যাক গুলো পড়ে পড়ে সোহানাকে বাহুডোরে ধরে রাখার ঘর্মাক্ত কল্পনায় মশগুল বাংলাদেশী পাঠক একো বুঝবেন বা আদৌ পড়তে চাইবেন এ নেহাৎ কষ্টকল্পনা। তবে বাংলাদেশ একাই তো নয়। সত্যিকার পাণ্ডিত্যপূর্ণ কাজের ব্যাপারে সম্পূর্ণ অজ্ঞ থেকে বাজারে বিক্রীর দৌড়ে এগিয়ে থাকা রদ্দিমালের পেছনে ছোটা একটি বৈশ্বিক ধারা। সে কারণেই ড্যান ব্রাউন বা জেমস রোলিন্সদের মতো লেখকরা পৌঁছে যান মানুষের দুয়ারে দুয়ারে, যদিচ এঁদের ইংরেজী লেখবার ভঙ্গিমা অনেক ক্ষেত্রেই ভুরু কুঁচকাবার মতো। ইংরেজী ব্যাকরণকে বৃদ্ধাঙ্গুল (নাকি মধ্যমা?) দেখিয়ে অহেতুক জটিল বাক্যে ঘুরেফিরে একই কথা লিখে যাওয়া ব্রাউন অনেক সমালোচকের হাসির পাত্র হয়েছেন। দি টেলিগ্রাফ ২০০৯ সালে ব্রাউনের জঘন্যতম বিশটি বাক্য নিয়ে একটি প্রতিবেদন বের করেছিলো, সেখান থেকেই একটি এখানে তুলে দেই,

Although not overly handsome in a classical sense, the forty-year-old Langdon had what his female colleagues referred to as an ‘erudite’ appeal — wisp of gray in his thick brown hair, probing blue eyes, an arrestingly deep voice, and the strong, carefree smile of a collegiate athlete.’


এই বাক্যটির বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো ব্রাউন ফিকশন লেখবার যে ‘রুল অফ থাম্ব’ সেই ‘show, don’t tell’ নিয়মটি লঙ্ঘন করেছেন। অর্থাৎ, তাঁর সৃষ্ট নায়কটি যে স্বর্গের দেবতাদের সকল গুণ ধারণ করেন তার পরিচয় তিনি পদে পদে না দিয়ে একবাক্যেই সেরেছেন। চলচ্চিত্রে পরিচালক নায়কের গুণগুলো একে একে প্রকাশ করেন তাশের কার্ডের মতো। কখনো আমরা দেখি নায়ক গীটার হাতে দারুণ গেয়ে চলেছেন, পরমুহুর্তেই ব্রেক ড্যান্স দিচ্ছেন, এরপরই নানচাকু নিয়ে ভিলেনের দলকে তাড়া করে বেড়াচ্ছেন। পেঁয়াজের খোসা ছাড়াবার মতো আমরা নায়কের এক একটি রূপের পরিচয় একটু একটু করে পাই আর আমাদের মুগ্ধতা বাড়ে। ভাবুন তো একবার, চলচ্চিত্রের শুরুতেই পরিচালক নেপথ্যে কন্ঠে ঘোষণা করে দিচ্ছেন “আমাদের নায়ক মারামারিতে দারুণ; তাঁর এক একটি ঘুষি যেন থরের হাতুড়ির বাড়ি। তাঁর গলায় অর্ফিয়ুস এর মতো সুর, আর গীটার বাদনে তিনি হেন্ড্রিক্স এর সমকক্ষ’... কেমন লাগতো আপনার? এই সমস্যাটি জেমস রোলিন্স এরও আছে, তাঁর উপন্যাস পড়তে বসলে মনে হয় হলিউডের ‘বি’ ঘরানার চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য পড়ছি। সে যাক, মূল বিষয়টি হলো জনপ্রিয় ঘরানার এ সকল pretentious plot নির্ভর থ্রিলার কাহিনীগুলো বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ভীষণ হতাশাদায়ক। নৃতত্ত্ববিদ্যা কি ইতিহাসের আর দশটা বই ঢুঁড়ে মালমশলা সংগ্রহ করে লেখেন বলেই বোধহয় লেখালেখিটাও যে একটা শিল্প তা এ ঘরানার অনেক লেখকই ভুলে যান। ফলে তাঁদের বইগুলো বহু গবেষণার ফল হয় বটে, ‘ভালো বই’ হিসেবে আর উতরাতে পারেনা। হালের বাংলাদেশী থ্রিলার লেখকদের একটি বড় অংশই বিদেশী এই লেখকদের কাছে ‘বাইয়্যাত’ নিয়েছেন। এ ধারায় বাংলায় এখন কম বই বেরোচ্ছেনা, শরীফুল হাসানের ‘ঋভু’ বইটি সে মিছিলে শামিল হওয়া আরেকটি গতানুগতিক বাজে বই।

‘ঋভু’র পাতায় পাতায় রয়েছে লেখকের অপরিপক্কতার ছাপ। অর্থাৎ, লেখক ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত লেখক হয়ে উঠবার আগে যথেষ্ট অনুশীলন করে মাঠে নামেন নি, যা কার্যত একজন লেখকের জন্য সবচেয়ে বড় অপরাধ। ‘show, don’t tell’ নিয়মভঙ্গের অন্যতম প্রকৃষ্ট উদাহরণও বটে এই বইটি। থ্রিলার গল্পকে মূল ধারার সাহিত্যের কাতারে অনেকেই আনতে চান না, সেটা এ গল্পগুলো লেখার দুর্বল ভঙ্গিমার জন্যই। এর অর্থ দাঁড়ায় এ লেখকেরা নিজেরাই তাঁদের লেখার প্রতি সৎ নন। এ বই সে বই ঘেঁটে হরেক রকম তথ্য দিয়ে পাঠককে চমকে দেয়াতেই তাঁরা দায়িত্ব শেষ হয়েছে মনে করেন (যেটি মূলত এই মহাযজ্ঞের সবচেয়ে সহজ কাজ), থ্রিলার লিখতে গেলেও যে ভাষার ওপর দক্ষতা থাকা চাই, সে ব্যাপারটিতে তাঁদের নিজেদের মোটে বিশ্বাস নেই। এঁরা নিজেরাই নিজেদের genre টিকে কলঙ্কিত করে আসছেন। লিখতে পারাটা শিক্ষিত মানুষের সহজাত ক্ষমতা। প্রকাশভঙ্গির সৌন্দর্য্যবোধটিই লেখককে সাধারণ থেকে আলাদা করে দেয়। বুদ্ধদেব বসু তাঁর সাহিত্য সমালোচনার বই ‘কালের পুতুল’-এ যে কথাটি বলেছেন, সেটিই বলি আবার, লেখালেখি শেখার কোন ইশকুল নেই। একমাত্র যে উপায়টিতে লেখালেখি শেখা যায় তা হলো পড়া। পেটে বিদ্যে না থাকলে কলমের কালি আটকে থাকবে এ অতি সাধারণ কথা। একো নিজে ভীষণ রকম পড়ুয়া ছিলেন বলেই নেইম অফ দি রোজ এর মতো মাস্টারপিস লিখতে পেরেছেন। সুদূর ইতালী পর্যন্ত গিয়ে একোকে খুঁজে ফিরতে হয় না, বনফুলের জীবনী ‘পশ্চাৎপট’ পড়লেও বোঝা যায় লেখালেখিটা যতটা না লেখা তার চেয়ে ঢের অনেকগুণ বেশী পড়া। বারবার বনফুল স্বীকার করেছেন তাঁর পড়ার অভ্যাসটিই তাঁকে বনফুল বানিয়ে তুলেছে। শরীফুল হাসানের ‘ঋভু’তে কোথাও সেই পড়ালেখা করবার নূন্যতম ছাপটিও পড়েনি। বালখিল্য প্লটের গতিময় উপন্যাসটি সাক্ষ্য দেয় লেখক তাঁর থ্রিলারের চেনা জগতের বাইরে পা ফেলেন নি বড় একটা।

পৃথিবীর ইতিহাস পাল্টে দেবার চক্রান্তয় রত গুপ্ত সঙ্ঘের গল্প সমৃদ্ধ থ্রিলারগুলো প্রায়ই প্রাচীন ইতিহাসের শরণাপন্ন হয়। কয়েকশ কি কয়েক হাজার বছর আগে শুরু হওয়া নিদারুণ এক চক্রান্তের জাল গুটিয়ে বর্তমানে নিয়ে আসেন লেখক। একোর নেম অফ দি রোজ-এর ষড়যন্ত্রের শুরু ১৩২৭ সালের ইওরোপে, ব্রাউনের ভিঞ্চি কোডের সূচনা যীশু খ্রিষ্টের সময় থেকে, জেমস রোলিন্স এর সিগমা ফোর্স সিরিজও প্রায়শয়ই কয়েক হাজার বছর পেছনে ফিরে যায় গল্পের খাতিরে। চেনা ছকে বাঁধা গল্প ‘ঋভু’তেও এসেছে তা। তেইশশ বছর আগের প্রাচীন ভারতে সম্রাট অশোকের ছেলেবেলা ও তাঁর শাসনামলে প্রায়শয়ই উঁকি দিয়েছেন লেখক। সম্রাট অশোকের সময়কালীন ভারতের যে চিত্র আঁকলেন তিনি, তার মালমশলা যোগাড় করতে কোন বই পড়া লাগেনা, উইকিপিডিয়ার গোটা তিন নিবন্ধে চোখ বোলালেই হয়। রোলিন্স, ব্রাউনরা উঁচু মানের লেখক এমন দাবী কেউ করেননা, কিন্ত তাঁদের বইগুলোর পেছনে দেয়া তাঁদের শ্রম অতো সস্তা নয়। ‘ঋভু’ লেখকের পরিশ্রম বিমুখতা ও সত্যিকার অর্থে পড়াশোনা করবার প্রতি অনীহা পাঠক হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে আমাকে আহত করেছে। এত অল্পে লেখক হওয়া চলেনা, সেটি লেখালেখির মহান ব্রতটির প্রতি ভীষণ অন্যায় হয়ে যায়।

‘ঋভু’ বইটির প্রকাশের পেছনে এর প্রকাশক ‘বাতিঘর’ এরও যথেষ্টই দায় আছে। যে চরিত্রগুলো লেখকের কলমে সম্মানিত হয়েছেন, অর্থাৎ, যাঁরা ‘গিয়েছেন’, ‘করেছেন’, ‘খেয়েছেন’, তাঁদেরই আবার প্রায়শয় পদাবনতি ঘটেছে। মর্যাদা হারিয়ে এ চরিত্রগুলো তখন স্রেফ ‘গিয়েছে’, ‘করেছে’, ‘খেয়েছে’...। লেখনীর এমন অসংলগ্নতা ও ভঙ্গিমার দুর্বলতা মনে প্রশ্ন দাঁড় করিয়ে দেয়, প্রকাশনী সংস্থাটির ‘প্রুফ রিডার’ পদটিতে কেউ আছেন কিনা, কিংবা প্রকাশনীটি ‘প্রুফ রিডার’-এর প্রয়োজনীয়তা আদৌ অনুভব করে কিনা। আদর্শিকভাবে, একটি প্রকাশনী সংস্থার রুচিশীল কর্ণধার বইটি প্রকাশ করতে যথেষ্টই বিব্রত বোধ করতেন, তবে দেশটি যেহেতু স্বজনপ্রীতির, তাই বুঝে নেই, লেখক মহাশয় সংস্থাটির ওপরের দিকের চাঁই হয়ে থাকলে (পূর্বে একই প্রকাশনী কর্তৃক ছাপানো লেখকের বাণিজ্যিকভাবে ভীষণ সফল বইগুলোর অর্থকরী সাফল্যের দায়ে উদ্ভূত 'স্বজনপ্রীতি', আক্ষরিক অর্থে নয়!) এটি না ছাপানোই অধিকতর বিব্রতবোধের কারণ হয়ে দাঁড়াতো।

বই ছাপানো সংক্রান্ত ব্যাপারে যথেষ্ট রুচিবোধের পরিচয় না দেয়া ছাড়াও আরো একটি ব্যাপারে ‘বাতিঘর’কে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায়। দু’শ সাঁইত্রিশ পৃষ্ঠার উপন্যাস ‘ঋভু’র মূল্য ‘বাতিঘর’ নির্ধারণ করেছে দু’শ বিশ টাকা। কালাপানি পেরিয়ে বহির্বিশ্বের অন্য দু’চারটে বইয়ের দোকানে ঢুঁ মারার সৌভাগ্য হয়েছে বলেই বলতে পারি, তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশে বইয়ের দামটা বড্ড বেশী, যা এখানের মানুষের আয় ব্যায়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ‘ঋভু’ যে ভাষায়, যে ভঙ্গিতে লেখা, এ ধাঁচের থ্রিলার গল্প সেবা/ প্রজাপতি প্রকাশনী আমাদের অবিশ্বাস্য কম দামে দিয়েছে; ছাত্রাবস্থাতে নানা ফিকির করে রিকশা ভাড়া বাঁচিয়ে কেনা বইগুলো আমাদের শৈশব রাঙ্গিয়েছে; এ সুখস্মৃতি স্রেফ গল্পের মারপ্যাঁচের জন্যই নয়, অর্থনৈতিক একটি সুখও এর সাথে জড়িয়ে আছে। ত্রিশ টাকা দামের সে গল্পের চেয়ে কোনমতেই মানে উন্নত না হওয়া ‘ঋভু’র দাম দেড় দশক পর কেন আজ দু’শ বিশ টাকা? দেড় দশকে আমাদের ক্রয়ক্ষমতা ঢের বেড়েছে সন্দেহ নেই, কিন্তু মূল্যস্ফীতিটা চোখে লাগবার মতোই। হয়তো এর উত্তর লুকিয়ে আছে উন্নত ছাপা, মোটা কাগজ আর রংবেরঙ ঝাঁ চকচকে প্রচ্ছদে। মলাটের উজ্জ্বলতা দিয়ে বইয়ের উপকরণের বিবর্নতা ঢাকার এ অভ্যেস চালিয়ে গেলে ব্যবসা হয়তো দাঁড়াবে, ভুঁইফোড় অপরিপক্ক লেখকদের রাহুগ্রাসে পড়ে যাবে গোটা জাতি; সত্তর থেকে ষোল, মনের বয়েস সবার আটকে থাকবে বারোতে।

পুনশ্চ: পৃথিবীর চেহারা পাল্টে দেবার ষড়যন্ত্রে রত আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী চক্রের নাম ‘আম্ব্রেলা কর্পোরেশন’, এ ব্যাপারটি নিতান্ত হাস্যকর। অন্তত ২০১৭ সালের প্রেক্ষিতে এ নামটি ভীষণ ‘ক্ষ্যাত’। ছাতা বাহিনীর কার্যকলাপ নব্বই এর দশকের বাংলা চলচ্চিত্রের আহমদ শরীফের ভিলেন বাহিনীর চেয়ে কোন অংশে উন্নত নয়। রাক্ষস তৈরী করে পৃথিবী দখল করে নেবার তেইশশ বছর আগের বুদ্ধির ওপর ভরসা করে বর্তমান সময়ে যাঁরা ক্রিয়াকলাপ চালান, তাঁদের প্রকৃতই মাথার ওপর ছাতা খুলে ঘোরাফেরা করা দরকার, নির্বুদ্ধতার চেহারাটা ঢাকা থাকবে অন্তত।
… (lisätietoja)
 
Merkitty asiattomaksi
Shaker07 | May 18, 2017 |

Tilastot

Teokset
6
Jäseniä
9
Suosituimmuussija
#968,587
Arvio (tähdet)
1.0
Kirja-arvosteluja
1
ISBN:t
2